স্বদেশ ডেস্ক:
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বারাইপুরে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নির্যাতিত নারী স্বামী ও দেবরের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেন। আজ শনিবার ভোরে ভুক্তভোগী নারীর স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম মো. হাসান (৪০)। তিনি উপজেলার ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়নের বারাইপুর গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে। ভুক্তভোগী ও পুলিশ জানায়, হাসান বিয়ের পর একাধিকবার শ্বশুরবাড়ি থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন। পেশায় পোল্ট্রি ব্যবসায়ী হাসান সম্প্রতি ব্যবসার জন্য শ্বশুরবাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা এনে দিতে স্ত্রীকে চাপ দেন।
কিন্তু যৌতুকের টাকা দিতে অসম্মতি জানালে গত ১৯ জুন বিকেলে স্বামী হাসান ও দেবর হোসাইন ক্ষুব্ধ হয়ে ওই গৃহবধূকে টয়লেট পরিষ্কারে ব্যবহৃত ব্রাশ দিয়ে পিটিয়ে নির্যাতন করেন। এছাড়া গৃহবধূর মাথা চুল কেটে দেন তারা। পরবর্তীতে ২৪ জুন বিকেলে আবারও নির্যাতন করলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
গত ৩০ জুন বিষয়টি নিয়ে ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক বৈঠক করেন। হাসান সংসার করতে না চাওয়ায় ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ২ লাখ টাকা নিয়ে স্ত্রী স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে। কিন্তু নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার বিচার না পাওয়ায় ওই নারী সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেননি। পরে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করলে শনিবার অভিযুক্ত স্বামী হাসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নির্যাতিত গৃহবধূ বলেন, ‘সালিসে ২ লাখ টাকায় ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু শারীরিক নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার বিচার না পাওয়ায় আমি সেই সিদ্ধান্ত মানিনি। তাই থানায় মামলা করেছি।’
ভুলইন দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান একরামুল হক বলেন, ‘উভয়পক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি। স্বামী স্ত্রীকে ২ লাখ টাকা পরিশোধ করবে এবং স্ত্রী স্বামীকে ডিভোর্স দিবে। উভয়পক্ষ এ সমাধানে সন্তুষ্ট ছিল। স্বামী রায় মেনে ৪০ হাজার টাকা আমার কাছে জমাও রেখেছে। বাকি টাকা আগস্ট মাসে পরিশোধ করার কথা। কিন্তু তার স্ত্রী কেন মামলা করল বিষয়টা জানি না।’
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, ‘গৃহবধূকে নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার বর্বর ঘটনায় তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’